বেশি পুষ্টি চাইলে যেভাবে খাবেন ডিম

প্রোটিনের আধার ডিম। বেশিরভাগ ডাক্তারই স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় ডিম রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলছেন, বেশিরভাগ পুষ্টিকর উপাদান প্রাকৃতিকভাবে যেসব খাবারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো ডিম।

চীনে প্রায় পাঁচ লাখ লোকের ওপর এক গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন একটা করে ডিম খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমতে পারে। ডিম থেকে শারীরিক উপকার পেতে হলে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে হবে।

অনেকেই চর্বি জমে যাওয়ার ডিম খেতে চান না। যেহেতু ডিমের কুসুমে অধিক মাত্রায় কোলেস্টেরল থাকে, তাই ধারণা করা হয়, যাদের হার্ট ডিজিজ রয়েছে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তাদের জন্য ডিমের কুসুম ক্ষতিকর।

বর্তমানে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে, ডিমের কুসুম থেকে যে কোলেস্টরেল পাওয়া যায়, তা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় না।

ডিমে ফলেট, কোলিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, লেটিইন এবং জি-অ্যাকজানথাইন থাকে। অনেকেই কুসুম ছাড়া ডিম খান কিন্তু কুসুমসহ ডিম ক্ষতিকর নয়।

ওমলেট ও সিদ্ধ ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিন

ডিমে ওমলেটে এ রয়েছে ৯০% ক্যালরি, ৬.৮ গ্রাম ফ্যাট, ২ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ১০% ফসফরাস সেদ্ধ ডিমে রয়েছে ৭৮ % ক্যালরি, ৬.৩% গ্রাম প্রোটিন, ৫.৩% গ্রাম ফ্যাট, ০.৬% গ্রাম কার্বহাইড্রেট, ১.৬% গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ১২.১০% ভিটামিন ‘বি’, ৯% ফসফরাস।

বিশেষজ্ঞদের মতে কখনো এমন ডিম কিনবেন না যা ভাঙা বা ফাটা- কারণে সামান্য ফাটা থাকলেও সেখানে ধুলাবালি বা জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে।

ডিমকে ভালো রাখতে তা ফ্রিজে রাখুন। ডিম বাক্সের ভেতরে থাকলে ডিমের সাদা অংশ তিন সপ্তাহ পর্যন্ত ভাল থাকে। কিন্তু ডিমের কুসুম ভালো থাকে তিনদিন। বরফে হিমায়িত অবস্থায় ডিমের সাদা ও কুসুম ভাল থাবে তিন মাস পর্যন্ত।

ডিম খাওয়া গর্ভবতী মা, শিশু, কিশোর, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপকারি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিমের সঙ্গে এমন অনেক খাবার একসঙ্গে খেলেই হতে পারে বিপদ। যেমন কলা, মধু, লেবু, টক দই ভুলেও খাবেন না ডিম খাওয়ার পরে।

ডিম রান্নার ব্যাপারে সবচেয়ে সহজ, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত হলো ডিম সিদ্ধ করে খাওয়া। বেশিরভাগ পুষ্টিবিদদের মতে, ডিমের ওমলেট না করে খাবার পরামর্শ দেন কারণ ডিম যে তেলে ভাজা হয়, তার মধ্যেকার স্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

কাঁচা ডিম বা হালকা করে রান্না ডিমও পুষ্টিযুক্ত, জীবাণু সংক্রমণের ব্যাপারে উদ্বেগ থাকলে ডিম রান্না করে খাওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

যারা ওজন ঠিক রাখতে চায় কিংবা বাড়াতে না চায় তাদের ডিম পোচ না খাওয়া ভালো। আর ব্লাডপ্রেশারের সমস্যা থাকলে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুদের জন্য ডিম পোচ ভালো। ডিম খাওয়ার অরুচি হলে ডিমের কারি রান্না করে ভাত বা রুটির সঙ্গে খেতে পারেন।